অনলাইন ডেস্ক
দেশের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দর বর্তমানে বছরে ৩৩ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে এবং ২০৩০ সাল নাগাদ এই সক্ষমতা ৪০ লাখে পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের মতে, কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি যুগোপযোগী অবকাঠামোও অপরিহার্য।
সম্প্রতি, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আয়োজনে এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আগামী ২০৪০ সাল পর্যন্ত কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে। তাদের মতে, ২০৪০ সাল নাগাদ চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা দাঁড়াবে এক কোটি ৭ লাখ টিইইউ, যা বর্তমান সক্ষমতার প্রায় চারগুণ।
বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে, ২০৩০ সালে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরে ৮ লাখ, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে ৫ লাখ এবং লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে ৯ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা অর্জিত হবে। এক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিশেষভাবে সড়ক পরিবহন, রেলপথ, এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৪০ সালের মধ্যে মাতারবাড়ি ডিপ সি-পোর্টের দ্বিতীয় পর্যায়ের টার্মিনাল ও লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল চালু হবে। পাশাপাশি, বে-টার্মিনাল নির্মাণের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সড়ক, রেল ও জলপথের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ হলে, ফাসিয়াখালি থেকে মাতারবাড়ি পর্যন্ত যানবাহনের চাপ বাড়বে এবং এর জন্য নতুন সড়ক, রেলপথ এবং অভ্যন্তরীণ নদী সংযোগের ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন টার্মিনালগুলি চালু হলে, সড়ক ও রেলপথে কনটেইনার এবং কার্গো পরিবহনের চাপ বৃদ্ধি পাবে। এই চাপ মোকাবিলায়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষভাবে, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে উৎপাদিত পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে বিদেশে রপ্তানি হবে, যা নতুন রুট এবং সংযোগ সড়ক নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা তৈরি করবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, বন্দর কার্যক্রমে সড়ক পরিবহন, রেলপথ, এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় ও সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে এসব মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনায় বসেছেন।
তিনি বলেন, "২০৪০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের এক কোটি সাত লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতার জন্য সঠিক অবকাঠামো উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি।"